পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী

ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শিক্ষা জীবন শেষ হতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। একদিকে লেখাপড়ার পাশাপাশি শিক্ষকতাও করছেন। এমন অবস্থায় পরিবারের ইচ্ছায় বিয়ে করেন। বছরের চাকা না ঘুরতেই ঘরে আসে নতুন অতিথি। কিন্তু সংসার কিভাবে সামনের দিকে অগ্রসর হবে সে চিন্তাই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। এমন অবস্থায় ঘরে বসেই বিকল্প আয়ের কথা ভাবতে শুরু করেন। একদিন সকালে বসে নিজের মনেই বলেন আর দেরি নয়, যা করার দ্রæতই করতে হবে।
বাড়িতেই গড়ে তুলেন কোয়েল পাখির ছোট্ট একটি খামার। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। নিজে দাঁড়িয়ে পড়েছেন শক্ত একটি ভিতের উপর। স্বপ্ন দেখছনে এলাকার বেকার যুবকদের রোজগারের পথে নামানোর। তিনি বর্তমানে একের ভেতর তিন। ছাত্র, শিক্ষক ও ব্যবসায়ী। নাম মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। বয়স মাত্র ২৬। বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পুটিবিলা ইউনিয়নের পহরচান্দা গ্রামে। বাবার নাম মীর আহমদ।
বিএসসি পাশ করে হেলাল বর্তমানে সাতকানিয়া সরকারি কলেজে মার্স্টাসের ছাত্র। পাশাপাশি সাতকানিয়া আফজলনগর এসডিএফ দাখিল মাদরাসায় খন্ডকালীন শিক্ষকতা করছেন। কিন্তু বেতন কম হওয়ায় লেখাপড়ার পাশাপাশি সংসার চালাতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল।
ছাত্র-শিক্ষক হেলাল অবশেষে নিজের তৃতীয় পরিচয় প্রকাশ করলেন কিছুদিনের মধ্যে। কোয়েল পাখির খামার গড়ার পর সংসার স্বচ্ছলতার মুখ দেখতে শুরু করে। বর্তমানে শুধু কোয়েল থেকেই মাসে প্রায় ৭০ হাজার টাকা আসে। সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে মাসে যা থাকে তাতেই তিনি খুশি।
কঠোর পরিশ্রমী ও হার না-মানা হেলাল বিয়ে করেছেন ২০১৯ সালে। ঘরে এসেছে ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান। এলাকার প্রায় সবাই হেলালকে এখন ‘একের ভেতর তিন’ হিসাবেই চিনেন। সংসারে তিন সদস্য এবং নিজে আবার তিনটি পৃথক পরিচয়ে পরিচিত। এক সময় হতাশার অন্ধকারে ডুবতে যাওয়া এই যুবক এখন দেখছেন আগামীর সুন্দর স্বপ্ন।
হেলাল উদ্দিন বলেন, তার খামারে প্রতিদিন গড়ে ৬০০ কোয়েল ডিম পাড়ে। প্রতিটি ডিম ২ টাকা করে বিক্রি করেন। আর ডিম থেকে কোয়েলের বাচ্চা উৎপাদনের জন্য একটি যন্ত্র কিনেছেন। ওই যন্ত্র দিয়ে ১৮ দিন পরপর এক হাজার ৬০০ বাচ্চা উৎপাদন করা যায়।
উৎপাদিত কোয়েলের বাচ্চাগুলো কেনার জন্য লোহাগাড়াসহ আজিজনগর, বাঁশখালী, কেরানীহাট ও পার্বত্য বান্দরবান থেকে লোকজন তার খামারে আসেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৬০০ ডিম বিক্রি করেন। আর দুই মাস পরপর বিক্রি করেন দেড় হাজার কোয়েল পাখি। প্রতিটি পাখি ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়। কোয়েল পাখির পরিচর্চা, খাবারসহ খামার পরিচালনার পর প্রতি মাসে যা আয় হচ্ছে তাতে পরিবার নিয়ে ভালোই আছেন।
মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন নিজের পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেন, খামারকে আরো সম্প্রসারণ করার ইচ্ছা রয়েছে। এ জন্য আশপাশের খালি জমি ইজারা নিয়ে সেখানে অনেক বড় করে খামার করতে চান। এলাকার বেকার যুবকরা সুন্দর সময় নষ্ট না করে নিজেরাই কিছু একটা করে বেকারত্ব ঘোচাতে পারে। প্রয়োজনে বেকারদের তিনি পরামর্শ দেবেন। তাছাড়া খামার বড় করতে পারলে এলাকার কিছু বেকার যুবককে কাজ দেবেন।
এ ব্যাপারে লোহাগাড়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম দেওয়ান ইনকিলাবকে বলেন, কোয়েল পাখির গোশত খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। দিন দিন এই পাখির চাহিদা দ্রæত বাড়ছে। কোয়েল পাখির খামার করে হেলাল উদ্দিন এলাকায় অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার খামারে উৎপাদিত কোয়েল পাখি ও ডিম দেখে এলাকার কিছু বেকার যুবক উদ্যোক্তা হওয়ার পথে হাঁটছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।